পুকুর নির্বাচন :
বাণিজ্যিক মাছচাষের জন্য অপেক্ষাকৃত বড় আকারের পুকুর, ৪০ শতাংশ বা তদূর্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়। পানির গভীরতা ৪ থেকে ৬ ফুটের মধ্যে হলে ভাল হয়। মাটি দোআঁশ বা এঁটেল দোআঁশ এবং পুকুরটি আয়তাকার হওয়া উত্তম।
পুকুর প্রস্তুতি
* পাড় ও তলদেশ: পাড়ে ঝোপ-ঝাড় থাকলে পরিষ্কার করতে হবে। পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে (কমপক্ষে দৈনিক ৮ ঘন্টা) সূর্যালোক প্রবেশের সুবিধার্থে সম্ভব হলে বড় গাছ কেটে ফেলতে হবে। সম্ভব না হলে অন্তত ভেতর দিকের ডাল-পালা কেটে ফেলতে হবে প্রয়োজনে পানি নিষ্কাশন করে পুকুরের পাড় মেরামত ও তলদেশ অতিরিক্ত কর্মমুক্ত করে সমান করতে হবে। অন্যথায় পুকুরের পানির গুণাগুণ দ্রুত খারাপ হয়ে যাবে। তাছাড়া, তলদেশ সমান না হলে পরবর্তীতে মাছ আহরণ করা কঠিন হবে।
* জলজ আগাছা ও অবাঞ্চিত মাছসহ রাক্ষুসে মাছ দুরীকরণ: যদি পানি প্রাপ্তি বিশেষ সমস্যা না হয় তাহলে পুকুরের পানি নিষ্কাশন করে সব জলজ আগাছা এবং অবাঞ্চিত মাছসহ রাক্ষুসে মাছ অপসারণ করা যেতে পারে। পানি প্রাপ্তি সমস্যা হলে, প্রথমে পুকুরে বারবার জাল টেনে যতদূর সম্ভব সকল মাছ ধরে ফেলতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সব মাছ ধরে ফেলার জন্য প্রতিশতক আয়তন ও প্রতিফুট পানির গড় গভীরতার জন্য ২৫-৩০ গ্রাম হারে রোটেনন প্রয়োগ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৪ ফুট পানির গড় গভীরতার এক একর পুকুরে ১০-১২ কেজি রোটেনন লাগবে।
* চুন প্রয়োগ: রোটেনন প্রয়োগ করা হয়ে থাকলে প্রয়োগর ২/১ দিন পর প্রতি শতকে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। এই হারে এক একর জলায়তন বিশিষ্ট পুকুরের জন্য চুন লাগবে ১০০ কেজি।
* সার প্রয়োগ: সাধারণভাবে একটি পুকুরে প্রস্তুতকালীন সারের সুপারিশকত মাত্রা নিম্নরূপ-
সার | প্রয়োগমাত্রা/শতক |
---|---|
অজৈব সার ইউরিয়া | ১৪০-১৬০ গ্রাম |
টিএসপি | ১০০-১২০ গ্রাম |
*টিএসপি সারের পরিবর্তে ডিএপি সার ব্যবহার করলে ইউরিয়ার প্রয়োগমাত্রা অর্ধেক হবে।
পোনা মজুদ সময় ও সতর্কতা: পুকুর প্রস্তুতির ৪/৫ দিন পর যখন পানি হালকা সবুজ রং ধারণ করবে তখন পানা মজুদ করা যাবে। চাপের পোনা ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসেই মজুদ করা হয়। প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোনা পুকুরে ছাড়ার সময় পুকুরের পানির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য পাত্রের পানি পুকুরের পানির সাথে কিছুটা সময় নিয়ে অল্প অল্প করে পরিবর্তন করতে হবে, যেন পাত্রের পানির তাপমাত্রা ও পি এইচ (pH) ক্রমশ পুকুরের পানির মত হয়ে যায়। এর পর পাত্রের পানিসহ মাছ ধীরে ধীরে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। মজুদ হার *দেশে এখন অঞ্চল ভেদে ভিন্ন ভিন্ন মজুদ হার ব্যবহৃত হচ্ছে, এতে সংখ্যার পাশাপাশি পোনার ওজন ও কম-বেশি হয়। পদ্ধতি ও প্রজাতিভেদে পোনার আকার ২৫০ গ্রাম থেকে ১.৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। প্যাডল হুইলে বা এ্যারেটরের সাহায্যে পানিতে অক্সিজেন মিশ্রণ ও পানি প্রবাহ তৈরির সুযোগ থাকলে মজুদ হার বাড়ানো এবং বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব।
পোনা মজুদ সময় ও সতর্কতা: পুকুর প্রস্তুতির ৪/৫ দিন পর যখন পানি হালকা সবুজ রং ধারণ করবে তখন পানা মজুদ করা যাবে। চাপের পোনা ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসেই মজুদ করা হয়। প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোনা পুকুরে ছাড়ার সময় পুকুরের পানির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য পাত্রের পানি পুকুরের পানির সাথে কিছুটা সময় নিয়ে অল্প অল্প করে পরিবর্তন করতে হবে, যেন পাত্রের পানির তাপমাত্রা ও পি এইচ (pH) ক্রমশ পুকুরের পানির মত হয়ে যায়। এর পর পাত্রের পানিসহ মাছ ধীরে ধীরে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। মজুদ হার *দেশে এখন অঞ্চল ভেদে ভিন্ন ভিন্ন মজুদ হার ব্যবহৃত হচ্ছে, এতে সংখ্যার পাশাপাশি পোনার ওজন ও কম-বেশি হয়। পদ্ধতি ও প্রজাতিভেদে পোনার আকার ২৫০ গ্রাম থেকে ১.৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। প্যাডল হুইলে বা এ্যারেটরের সাহায্যে পানিতে অক্সিজেন মিশ্রণ ও পানি প্রবাহ তৈরির সুযোগ থাকলে মজুদ হার বাড়ানো এবং বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব।
পুকুর খননে মাটির হিসাব
সমস্যা – ১
মনে করি ১১৪ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৪০ ফুট প্রস্থের একটি পুকুরকে ৬ ফুট গভীর করতে হবে। তাহলে কত ঘনফুট মাটি কাটতে হবে। উল্লেখ্য, উক্ত পুকুরের ঢাল হবে ১ অনুপাত ১.৫ অর্থ্যাৎ গভীরতা অনুপাত ঢাল = ১ অনুপাত ১.৫। প্রতি হাজার মাটি কাটতে ১০০০/- টাকা লাগলে পুকুরটি খনন করতে মোট কত টাকা খরচ হবে?
সমাধানঃ সম্পূর্ণ পুকুরটি আয়তাকারে খনন করলে মাটি কাটতে হতো-
১১৪ × ৪০ × ৬ = ২৭৩৬০ ঘনফুট
কিন্তু যখন ঢাল রাখা হচ্ছে তখন এই পরিমাণ মাটি খননের দরকার হচ্ছে না, কারণ ঢাল যে পর্যন্ত বিস্তৃত সে পর্যন্ত আয়তাকারে মাটি খনন করলে যে পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হতো ঢাল থাকার কারণে তার অর্ধেক পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হবে। অর্থ্যাৎ ঢাল থাকার কারণে ২৭৩৬০ ঘনফুট মাটি কাটার দরকার হবে না। প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ এর চেয়ে কম হবে।
যখন ঢাল ১অনুপাত ১.৫ তখন ঢালের নীচের প্রান্ত পুকুরের পাড় থেকে ৯ ফুট দূরে গিয়ে পুকুরের তলায় মিশবে (কারণ গভীরতা ৬ ফুটের দেড়গুণ বিস্তৃত হবে ঢাল)। অর্থ্যাৎ দুই পাশ থেকে ৯ + ৯ = ১৮ ফুট জায়গা কমে যাবে। সুতরাং পুকুরের কেন্দ্রের পরিমাপ হবে-
দৈর্ঘ্য = ১১৪ – ১৮ = ৯৬ ফুট
প্রস্থ = ৪০ – ১৮ = ২২ ফুট এবং
গভীরতা = ৬ ফুট
আয়তন হবে = ৯৬ × ২২ × ৬ = ১২৬৭২ ঘনফুট
অতএব, প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ/আয়তন হবে (২৭৩৬০ + ১২৬৭২)/২ = ২০০১৬ ঘনফুট
এখন এই হিসাব সঠিক আছে কিনা অন্য পদ্ধতিতে যাচাই করে দেখা যাক-
এই পদ্ধতিতে প্রথমে ঢাল বাদে পুকুরের ভিতরের অংশের মাটি খননের পরিমাপ বের করতে হবে।
উপরের হিসাব থেকে আমরা পাই সেই পরিমাণ হলো = ১২৬৭২ ঘনফুট — (১)
এখন আমরা যে অংশ জুড়ে ঢাল বিস্তৃত সে অংশের মাটি খননের হিসাব বের করব। ঢালকে আমরা একটি বড় আকারের ত্রিভূজ ধরতে পারি যার ভূমির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট এবং উচ্চতা ৬ ফুট। এবং উক্ত ত্রিভূজের পুরুত্বও আছে। আমরা সাধারণভাবে ছবিতে যে ত্রিভূজ আঁকি তার কিন্তু পুরুত্ব থাকেনা। ত্রিভূজের আয়তন বের করতে গিয়ে আমরা সেজন্য আয়তনকে বলে থাকি ক্ষেত্রফল। কারণ, আয়তন হতে গেলে তিনটি মাত্রা অবশ্যই থাকতে হবে, যথাঃ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, এবং বেধ বা পুরুত্ব। কিন্তু ছবির ত্রিভূজের কেবল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থাকে, বেধ থাকে না। ছবির ত্রিভূজের ক্ষেত্রে যে পুরুত্ব থাকে তাকে তল ধরা হয়। তল এমনি একটি পরিমাপ যার সাথে যেকোন একককে গুণ করে ঐ এককে ফলাফল বের করা যায়। অর্থ্যাৎ তাকে ইঞ্চি দ্বারা গুণ করলে ইঞ্চি এককে প্রকাশ করা যায়, আবার ফুট দ্বারা গুণ করে ফুট এককে প্রকাশ করা যায়।
সুতরাং আমরা যদি ঢালরূপ ত্রিভূজের একটি তলের আয়তন/ক্ষেত্রফল বের করতে পারি এবং সেটাকে তার পুরুত্ব দ্বারা গুণ করি তাহলে পুকুরের সেই পাড়ের/দিকের প্রকৃত আয়তন বের করতে পারি। এখন দেখা যাক ঢালের উপরি তলের ক্ষেত্রফল কত যার ভূমি ৯ ফুট এবং উচ্চতা ৬ ফুট। ত্রিভূজের ক্ষেত্রফলের সূত্র বসিয়ে পাই ১/২ × ৯ × ৬ = ২৭ বর্গফুট।
তাহলে পুকুরের দৈর্ঘ্য বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ২৭ × ১০৫ ঘনফুট বা ৫৬৭০ ঘনফুট — (২)
(দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ওভারল্যাপ করায় প্রতিটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়টি) প্রকৃত পরিমাপের চেয়ে ৯ ফুট কম হবে, কারণ ঢালের অনুপাত থেকে এটা বুঝা যাচ্ছে যে, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়ে ৯ ফুট এলাকা জুড়ে পরস্পরকে ওভারল্যাপ করে আছে।
অন্যদিকে, পুকুরের প্রস্থ বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ২৭ × ৩১ ঘনফুট বা ১৬৭৪ ঘনফুট — (৩)
সুতরাং (১), (২), ও (৩) নং উপাত্ত থেকে পাওয়া যায় ১২৬৭২ + ৫৬৭০ + ১৬৭৪ = ২০০১৬ ঘনফুট মাটি।
শ্রমিকরা এক হাজার ঘনফুট মাটিকে বলে এক হাজার মাটি। অতএব, তাদের ভাষায় পুকুরটি খনন করতে ২০ হাজার ১৬ মাটি বা ২০.০১৬ হাজার মাটি কাটতে হবে। সুতরাং পুকুরটি খনন করতে মোট ১০০০ × ২০.০১৬ = ২০০১৬ টাকা খরচ হবে (প্রতি হাজার মাটি ১০০০ টাকা হিসেবে)।
সমস্যা – ২
মনে করি ১৫৪ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৮০ ফুট প্রস্থের একটি পুকুরটি ৫ ফুট গভীর করতে হবে। তাহলে কত ঘনফুট মাটি কাটতে হবে। উল্লেখ্য, উক্ত পুকুরের ঢাল হবে ১ ঃ ১ অর্থ্যাৎ গভীরতা ঃ ঢাল = ১ ঃ ১। প্রতি হাজার মাটি কাটতে ১১৫০/- টাকা লাগলে পুকুরটি খনন করতে মোট কত টাকা খরচ হবে?
সমাধানঃ সম্পূর্ণ পুকুরটি আয়তাকারে খনন করলে মাটি কাটতে হতো-
১৫৪ × ৮০ × ৫ = ৬১৬০০ ঘনফুট
কিন্তু যখন ঢাল রাখা হচ্ছে তখন এই পরিমাণ মাটি খননের দরকার হচ্ছে না, কারণ ঢাল যে পর্যন্ত বিস্তৃত সে পর্যন্ত আয়তাকারে মাটি খনন করলে যে পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হতো ঢাল থাকার কারণে তার অর্ধেক পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হবে। অর্থ্যাৎ ঢাল থাকার কারণে ৬১৬০০ ঘনফুট মাটি কাটার দরকার হবে না। প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ এর চেয়ে কম হবে।
যখন ঢাল ১ ঃ ১ তখন ঢালের নীচের প্রান্ত পুকুরের পাড় থেকে ৫ ফুট দূরে গিয়ে পুকুরের তলায় মিশবে (কারণ গভীরতা ৫ ফুটের সম পরিমাণ বিস্তৃত হবে ঢাল)। অর্থ্যাৎ দুই পাশ থেকে ৫ + ৫ = ১০ ফুট জায়গা কমে যাবে। সুতরাং পুকুরের কেন্দ্রের পরিমাপ হবে-
দৈর্ঘ্য = ১৫৪ – ১০ = ১৪৪ ফুট
প্রস্থ = ৮০ – ১০ = ৭০ ফুট এবং
গভীরতা = ৫ ফুট
যার আয়তন হবে = ১৪৪ × ৭০ × ৫ = ৫০৪০০ ঘনফুট
অতএব, প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ/আয়তন হবে (৬১৬০০ + ৫০৪০০)/২ = ৫৬০০০ ঘনফুট
এখন এই হিসাব সঠিক আছে কিনা অন্য পদ্ধতিতে যাচাই করে দেখা যাক-
এই পদ্ধতিতে প্রথমে ঢাল বাদে পুকুরের ভিতরের অংশের মাটি খননের পরিমাপ বের করতে হবে।
উপরের হিসাব থেকে আমরা পাই সেই পরিমাণ হলো = ৫০৪০০ ঘনফুট — (১)
এখন আমরা যে অংশ জুড়ে ঢাল বিস্তৃত সে অংশের মাটি খননের হিসাব বের করব। ঢালকে আমরা একটি বড় আকারের ত্রিভূজ ধরতে পারি যার ভূমির দৈর্ঘ্য ৫ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট। এবং উক্ত ত্রিভূজের পুরুত্বও আছে। আমরা সাধারণভাবে ছবিতে যে ত্রিভূজ আঁকি তার কিন্তু পুরুত্ব থাকেনা। ত্রিভূজের আয়তন বের করতে গিয়ে আমরা সেজন্য আয়তনকে বলে থাকি ক্ষেত্রফল। কারণ, আয়তন হতে গেলে তিনটি মাত্রা অবশ্যই থাকতে হবে, যথাঃ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, এবং বেধ বা পুরুত্ব। কিন্তু ছবির ত্রিভূজের কেবল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থাকে, বেধ থাকে না। ছবির ত্রিভূজের ক্ষেত্রে যে পুরুত্ব থাকে তাকে তল ধরা হয়। তল এমনি একটি পরিমাপ যার সাথে যেকোন একককে গুণ করে ঐ এককে ফলাফল বের করা যায়। অর্থ্যাৎ তাকে ইঞ্চি দ্বারা গুণ করলে ইঞ্চি এককে প্রকাশ করা যায়, আবার ফুট দ্বারা গুণ করে ফুট এককে প্রকাশ করা যায়।
সুতরাং আমরা যদি ঢালরূপ ত্রিভূজের একটি তলের আয়তন/ক্ষেত্রফল বের করতে পারি এবং সেটাকে তার পুরুত্ব (দৈর্ঘ্য) দ্বারা গুণ করি তাহলে পুকুরের সেই পাড়ের/দিকের প্রকৃত আয়তন বের করতে পারি। এখন দেখা যাক ঢালের উপরি তলের ক্ষেত্রফল কত যার ভূমি ৫ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট। ত্রিভূজের ক্ষেত্রফলের সূত্র বসিয়ে পাই ১/২ × ৫ × ৫ = ১২.৫ বর্গফুট।
তাহলে পুকুরের দৈর্ঘ্য বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ১২.৫ × ১৪৯ ঘনফুট বা ৩৭২৫ ঘনফুট — (২)
(দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ওভারল্যাপ করায় প্রতিটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়টি) প্রকৃত পরিমাপের চেয়ে ৫ ফুট কম হবে, কারণ ঢালের অনুপাত থেকে এটা বুঝা যাচ্ছে যে, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়ে ৫ ফুট এলাকা জুড়ে পরস্পরকে ওভারল্যাপ করে আছে।
অন্যদিকে, পুকুরের প্রস্থ বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ১২.৫ × ৭৫ ঘনফুট বা ১৮৭৫ ঘনফুট — (৩)
সুতরাং (১), (২), ও (৩) নং উপাত্ত থেকে পাওয়া যায় ৫০৪০০ + ৩৭২৫ + ১৮৭৫ = ৫৬০০০ ঘনফুট মাটি।
শ্রমিকরা এক হাজার ঘনফুট মাটিকে বলে এক হাজার মাটি। অতএব, তাদের ভাষায় পুকুরটি খনন করতে ৫৬ হাজার মাটি কাটতে হবে। সুতরাং পুকুরটি খনন করতে মোট ১১৫০ × ৫৬ = ৬৪৪০০ টাকা খরচ হবে (প্রতি হাজার মাটি ১১৫০ টাকা হিসেবে)।
পূর্বে খননকৃত পুকুর বা জলাশয় পুনঃখননের ক্ষেত্রে পূর্বে কৃত কাজের পরিমাণ (প্রি ওয়ার্ক এস্টিমেট) খনন শুরুর আগেই হিসাব করে নিতে হবে। পুনঃখননের পর মোট গভীরতা যেন হিসাব করা যায় তার জন্য স্থির কোন চিহ্ন বা প্লাটফর্ম থেকে হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে। খনন কাজ শেষ হলে খননকৃত জলাশয়ের তলা থেকে সব জায়গায় পানির গভীরতা সমান থাকলে বুঝতে হবে খননের পরিমাণ সঠিক আছে। পুনঃখনন শুরুর আগে জলাশয়ের তলা উচু নিচু থাকলে গভীরতা মাপার ক্ষেত্রে গড় মান ধরতে হবে। (সংগৃহীত)
পুকুর পরিমাপ পদ্ধতি
মাছ চাষের ক্ষেত্রে অহরহ বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের পুকুরের আয়তন দরকার কার হতে পারে। যেমন মোট পানির পরিমান, মোট আয়তন মাছের সংখ্যা ইত্যাদি। এসব মাপের মাধ্যমে নির্ধারন করা সম্ভব কতটুকু ঔষধ অথবা খাদ্য এমন কি কোন প্রকারের খাদ্য উপাদন কতটুকূ প্রয়োগ করতে হবে কি পরিমান পানিতে, কতগুলো মাছের জন্য প্রভৃতি।
যেমন মনে করি আমাদের একটি পুকুরের
দৈর্ঘ্য = ৩০ ফুট,
প্রস্থ = ২২ ফুট এবং
গভীরতা = ৭ ফুট।
১ শতাংশ = ৪৩৫.৬ বর্গফুট
১ ঘনফুট = ২৮.৩ লিঃ পানি
১ শতাংশ = ৪০.৪৮ বর্গ মিটার
১ ঘনমিঃ = ১০০০ লিঃ পানি
পুকুরের ক্ষেত্রফল = ৩০ X ২২ = ৬৬০ বর্গফুট = (৬৬০ / ৪৩৫.৬) = ১.৫২ শতক জমি
পুকুরের আয়তন = ৩০ X ২২ X ৭ = ৪৬২০ ঘনফুট = (৪৬২০ X ২৮.৩) = ১,৩০,৭৪৬ লিঃ পানি
ঔষধ প্রয়োগ মাত্রাঃ- PPM পি পি এম = Parts Per Million= ১ মিঃ গ্রাঃ / ১ লিঃ পানি
= ১ গ্রাঃ / ১০০০ লিঃ পানি
উল্লেখিত পরিমান পুকুর বা পানিতে ১ পিপিএম মানে হল আমাদের ১৩০.৭৫ গ্রাম পরিমান ঔষধ দিতে হবে।
মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি করি
সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ি।
মৎস্য বাংলাদেশ ওয়েব সাইটির সাথে থাকতে ই-মেইল ঠিকানা লিখুন।
স্বত্ব © ২০২১-২২ মৎস্য বাংলাদেশ সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত।