পুকুরে সার প্রয়োগের সম্পূর্ণ ভিডিও


সার প্রয়োগের নিয়ম

পুকুরে সঠিকভাবে সার প্রয়োগ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়, যাতে পুকুরের পানির গুণমান বজায় থাকে এবং মাছের উৎপাদন বাড়ে। সার প্রয়োগের নিয়মগুলো নিম্নরূপ:

### ১. **পুকুরের প্রাথমিক প্রস্তুতি:**
- পুকুরের পানি শুকিয়ে পুকুর তলায় জমে থাকা পচা পাতা, কাঁদা ও অন্যান্য বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে। - যদি পানি না শুকানো সম্ভব না হয়, তবে পুকুরের তলায় জৈব সার বা চুন প্রয়োগ করা যায়।

### ২. **সার প্রয়োগের ধরন:**
সার প্রয়োগের জন্য সাধারণত দুটি ধাপ অনুসরণ করা হয়:

**ক. পুকুরে প্রাথমিক সার প্রয়োগ:**
- পুকুরের মাটি ও পানির গুণমান ঠিক করতে মাছ ছাড়ার আগে প্রাথমিকভাবে সার প্রয়োগ করা হয়। - জৈব সার: প্রতি একর পুকুরে সাধারণত ১০০০-১৫০০ কেজি গোবর বা অন্যান্য জৈব সার প্রয়োগ করা হয়। - রাসায়নিক সার: ইউরিয়া ৪০-৫০ কেজি এবং টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট) ২০-২৫ কেজি প্রতি একর হিসাবে প্রয়োগ করা হয়।

**খ. নিয়মিত সার প্রয়োগ:**
- মাছ ছাড়ার পর প্রতি ১৫-২০ দিন পর নিয়মিতভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে। - ইউরিয়া ৮-১০ কেজি এবং টিএসপি ৬-৮ কেজি প্রতি একর হিসাবে প্রয়োগ করতে হয়।

### ৩. **সার প্রয়োগের পদ্ধতি:**
- **জৈব সার:** জৈব সার প্রয়োগ করার আগে ভালোভাবে পচিয়ে নিতে হয় এবং সরাসরি পুকুরে ছড়িয়ে দিতে হয়। - **রাসায়নিক সার:** রাসায়নিক সার সাধারণত পানিতে মিশিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে তা পানিতে দ্রুত দ্রবীভূত হয় এবং প্ল্যাংকটনের উৎপাদন বাড়ায়।

### ৪. **পানি ও পরিবেশের গুণমান পর্যবেক্ষণ:**
- নিয়মিত পানির গুণমান পরীক্ষা করতে হবে। যদি পানি ঘন সবুজ বা কালচে হয়ে যায়, তাহলে সার প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে বা কমিয়ে দিতে হবে। - পুকুরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন নিশ্চিত করতে হবে, অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করলে পানির অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে।

### ৫. **মৌসুম অনুযায়ী সার প্রয়োগ:**
- গ্রীষ্মকাল বা বর্ষাকালে পুকুরের পানির পুষ্টিমান বেশি কমে যায়, তাই এই সময় সার প্রয়োগের হার একটু বাড়াতে হতে পারে। - শীতকালে পুকুরের পানির তাপমাত্রা কম থাকলে সার প্রয়োগের হার কমানো যেতে পারে, কারণ এই সময় প্ল্যাংকটন বৃদ্ধির হার কমে যায়।
সার প্রয়োগের এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে পুকুরের স্বাস্থ্য বজায় থাকবে এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

পুকুরে কেন সার প্রয়োগ করবেন?
পুকুরে সার প্রয়োগ করার প্রধান কারণ হলো মাছের খাদ্যশৃঙ্খলা উন্নত করা এবং মাছের উৎপাদন বাড়ানো। পুকুরের পানিতে স্বাভাবিকভাবে থাকা প্ল্যাংকটন, শৈবাল এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র জীব মাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। সার প্রয়োগ করলে এই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। সার দুটি প্রধান ধরণের হয়ে থাকে:
1. **জৈব সার** (যেমন গোবর, পাতা, ফসলের বর্জ্য): এটি পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং পুকুরের মাটি ও পানির পুষ্টিমান উন্নত করে।
2. **রসায়নিক সার** (যেমন ইউরিয়া, টিএসপি): এটি দ্রুত পুষ্টি সরবরাহ করে এবং প্ল্যাংকটনের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
সার প্রয়োগের মাধ্যমে: - পানিতে খাবার চেইনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। - পুকুরে অক্সিজেনের পরিমাণ ঠিক থাকে। - মাছের বৃদ্ধির হার দ্রুত হয় এবং মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
তবে, সার প্রয়োগের পরিমাণ ও সময় সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হয়, যাতে পুকুরে পানির গুণমান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
* সার প্রয়োগ: একটি পুকুরে প্রস্তুতকালীন সারের সুপারিশকত মাত্রা নিম্নরূপ-
সার প্রয়োগমাত্রা/শতক
অজৈব সার ইউরিয়া ১০০-১৫০ গ্রাম
টিএসপি ৫০-৭৫ গ্রাম

প্রতিমাসে সারের প্রস্তুতি

* সার প্রয়োগ: প্রতিমাসে সারের সুপারিশকত মাত্রা নিম্নরূপ-
সার প্রয়োগমাত্রা/শতক
অজৈব সার ইউরিয়া ৮০-১২০ গ্রাম
টিএসপি ৫০-৬০ গ্রাম

*টিএসপি সারের পরিবর্তে ডিএপি সার ব্যবহার করলে ইউরিয়ার প্রয়োগমাত্রা অর্ধেক হবে।

যোগাযোগ করুন

মৎস্য বাংলাদেশ

আমাদের সম্পর্কে
আপনাকে মাছ চাষের তথ্য ও পরামর্শ ওয়েব সাইটে স্বাগতম। আমাদের লক্ষ্য নতুন মৎস্য চাষী তৈরী করা এবং তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করা।

মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি করি
সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ি।

সংযুক্ত থাকুন

মৎস্য বাংলাদেশ ওয়েব সাইটির সাথে থাকতে ই-মেইল ঠিকানা লিখুন।


উদ্ভাবন ও পরিকল্পনায়
হৃদয় জোমাদ্দার

হৃদয় জোমাদ্দার

ঢাকা, বাংলাদেশ।

[email protected]

স্বত্ব © ২০২১-২২ মৎস্য বাংলাদেশ সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত।